বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বিএনপি নমিনেশন অকশন করে জয়ী হবে কিভাবে: শেখ হাসিনা

তরফ নিউজ ডেস্ক : সদ্য শেষ হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নমিনেশন অকশনে করেছে বলে মন্তব্য করে প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নমিশেন ট্রেড এবং অকশন করে তারা জয়ী হবে কিভাবে? জনগণ তাদের ভোট দেয়নি।

 জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্য এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে রীতিমতো তা অকশনে পরিণত হয়। সকাল-বিকাল প্রতিটি আসনে কয়েকজনকে প্রার্থী ঘোষণা দেয় তারা। যখন যে বেশি টাকা দিয়েছে তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। একটা দল যখন সিট অকশনে দেয় সেখানে আর কী হবে? জয়ের আশা করে কীভাবে?

‘তারা (বিএনপি) জামায়াত ইসলামীকে মনোনয়ন দিয়েছে, স্বাধীনতা বিরোধীদের দলকে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। তারা তাদের ভোট দেয়নি। এ পরাজয়ের কারণ তাদেরই (বিএনপি) খুঁজে বের করতে হবে।’

আন্দোলন করে যারা ব্যর্থ হয় তারা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে জনগণ আমাদের ম্যান্ডেট দিয়েছিল। ব্যাপক হারে ভোট পড়ে। আপনারা যদি ২০১৮ এর নির্বাচন আর ২০০৮ এর নির্বাচন তুলনা করেন, ২০০৮ এ কিন্তু ভোট পড়েছিল আরো অনেক বেশি। প্রায় ৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল। কোনো কোনো কেন্দ্রে প্রায় ৯০ ভাগের উপরে ভোট পড়ে।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে সমালোচকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই লিখছে, অনেকেই অনেক কথা বলছে। কিন্তু তারা যদি এই তুলনাটা দেখেন, তাহলে দেখবেন যে ২০০৮ এর নির্বাচনে ভোট পড়েছিল অনেক বেশি।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা এদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তিনি বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০বছরেই বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতো। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা তাকে হারিয়েছি।

‘একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে। আমরা ১০ বছরে যা করেছি, অন্যান্যরা ২৮ বছরেও করতে পারেনি। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন-ই আমাদের লক্ষ্য। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করেছি,’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা উন্নয়নটা গ্রামে, তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। যার কারণে মানুষ আমাদের ভোট দিয়ে আবারও তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

‘একই সঙ্গে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষকে, যারা প্রত্যেকে আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, ভোট দিয়েছেন।’

স্বাধীনতার পরে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে কীভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চান-সে বিষয়ে ভাষণে বলেছিলেন। তার সেই পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

‘আমরা চাই, যে উন্নয়ন করেছি সেটা যেনো অব্যাহত থাকে। আমি বিশ্বাস করি জনগণ যে বিশ্বাস রেখে আমাদের নির্বাচিত করেছে, আমরা তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।’

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়লে বুঝবেন তিনি কত কষ্ট করেছেন। ১৯৪৮ সাল থেকে তার বিরুদ্ধে অর্থাৎ তিনি কী করেন, কোথায় যান প্রতিটি মুহূর্তের রিপোর্ট করেছিলো গোয়েন্দারা। এগুলো আমি ক্রমান্বয়ে প্রকাশ করবো।

তিনি বলেন, তার (বঙ্গবন্ধু) বইগুলো পড়লেই বোঝা যায় যে তার ভাবনায় ছিলো বাংলাদেশের মানুষ; মানুষ উন্নত জীবন পাবে এটাই ছিলো তার একমাত্র লক্ষ্য। তার সেই আত্মত্যাগ মনে করেই আমাদের চলতে হবে। মানুষ যদি ভালোভাবে চলতে পারে, উন্নত জীবন পায়, শান্তিতে থাকতে পারে এর চেয়ে একজন রাজনীতিবিদের আর কী চাওয়া হতে পারে!

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতার ৫৪ হাজার বর্গমাইলজুড়ে আছেন- আমি সব সময় এটাই ফিল (অনুভব) করি। আমি মনে করি, আমার মা-বাবা আমাদের ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন। নয়তো আমারপক্ষে দেশের এতো উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হতো না।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com